শিরোনাম
রামুতে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উদযাপন দখলমুক্ত হলো রামু চৌমুহনী ও পঞ্জেখানা বাজার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চালু হলো ‘ভ্রমণিকা’ অ্যাপ: পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ গাইড ইউনিয়ন হসপিটাল বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে সামাজিক দায়বোধের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অভ্যন্তরীণ ও সার্কভুক্ত দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভ্রমণে ফ্লাইট টিকিটের খরচ বাড়ছে ২০২৫ সালে কক্সবাজার পর্যটনে বিদেশী পর্যটক আকর্ষণের উদ্যোগ ও সম্ভাবনা মফিজুর রহমান এর মৃত্যুতে কক্সবাজার কমিউনিটি এ্যালায়েন্স- ঢাকা ‘গভীর শোক প্রকাশ রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল কক্সবাজার বেসরকারি গণপাঠাগার পরিষদ গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি টেকনাফ প্রতিনিধি কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

জেলা হিসেবে কক্সবাজার কি শুধু দিয়েই যাবে?

১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত কক্সবাজার বিমানবন্দর এখন এক নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে এটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদা পেতে চলেছে। সম্প্রসারিত রানওয়ে, বোর্ডিং ব্রিজ সহ নতুন টার্মিনাল ভবন, এবং সমুদ্রের কোল ঘেঁষে বিমান অবতরণের অভিজ্ঞতা—সব মিলিয়ে এটি পর্যটন ও সংযোগের ক্ষেত্রে এক অসামান্য মাইলফলক। ২৭ অক্টোবর রাতে প্রথম ফ্লাইট চালুর সাথে সাথে এটি কক্সবাজারকে স্থানীয়  ও বিশ্বের পর্যটকদের কাছে আরো উন্মুক্ত করবে।
কিন্তু এই অর্জন সত্ত্বেও প্রশ্ন থেকেই যায়—
আমরা কি এই বিপুল পর্যটন প্রবাহের জন্য পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত?

জেলা হিসেবে কক্সবাজার কী শুধু দিয়েই যাবে?
জাতীয় অর্থনীতিতে আমাদের অসামান্য অবদান সত্ত্বেও আমাদের অধিকার নিশ্চিত ভাবে অবহেলিত হয়েছে, সামান্য বিমান বন্দর পর্যন্ত প্রধান সড়কটি এখনো খুবই সরু, যা শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগ সড়ক হওয়া সত্ত্বেও একটি গ্রামের ছোট পাড়া রাস্তায় পরিণত হয়েছে যেন। রাস্তার দু’পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে যান্ত্রিক ও ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপ, খোলা এলপিজি গ্যাস স্টোরেজ, নির্মাণ সামগ্রী এর দোকান এবং মাঝেমধ্যে বিশেষ করে সন্ধা এর পর গরুর পাল রাস্তা দখল করে রাখে। অবৈধ টমটম ও ব্যাটারি চালিত রিকশার গ্যারেজ রাস্তার প্রশস্থতা কমিয়ে দিচ্ছে, এবং প্রতিবছরেই রাস্তা দখল হয়ে যাচ্ছে এবং কিছু কিছু অংশে সড়কের প্রস্থ মাত্র ২০ ফুটের নিচে নেমে এসেছে। অনেক সময় পাশাপাশি দুটো ওয়াইড বডিএর গাড়ি ক্রস করতে পারেনা। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং থাকে।

এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যটন নগরীর অন্যতম প্রধান প্রবেশপথে অব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পনার অভাব আমাদের সামগ্রিক প্রস্তুতির অভাবকে প্রকাশ করে। এই শহরটি যেখানে বিশ্বমানের পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চলেছে, সেখানে সংযোগ সড়কের এই দুরবস্থা কি আমাদের পর্যটন খাতকে আরও উন্নত করতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না?

এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, কারণ পর্যটনের পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতেও এটি ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ইলিশ এর জন্য মাতোয়ারা এই জাতির ইলিশ সহ সকল মাছের অবতরণ ও পরিবহণ এর একমাত্র রাস্তা ও এটি, সনাদিয়া, মহেশখালী, কুতব্দিয়া এবং দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যাত্রী পরিবহণ এর একমাত্র রাস্তাও এটিই।
পর্যটন একটি সেবা সংলিষ্ট সেক্টর, যেখানে সঠিক গুণগত সেবা প্রদানের মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করা হয়। আপনি একজন পর্যটককে দরজা খুলে সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনলেও, যদি তাকে মানসম্পন্ন সেবা দিতে না পারেন, তবে এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। পর্যটকদের প্রত্যাশিত সেবা নিশ্চিত করতে অবকাঠামো, পরিবহন, নিরাপত্তা, এবং স্থানীয় পরিষেবাগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। কক্সবাজারের মতো আন্তর্জাতিক মানের পর্যটনকেন্দ্রের জন্য এই বিষয়গুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের বিমানবন্দর উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দ্বার খুলে দিচ্ছি, কিন্তু তাদেরকে যথাযথ অভ্যর্থনা ও সেবা দিতে হলে, বিমানবন্দর থেকে শুরু করে শহরের মূল অবকাঠামো পর্যন্ত উন্নত করতে হবে। নইলে এই পর্যটন সম্ভাবনাটি পর্যাপ্ত সুবিধা প্রদানে ব্যর্থতার কারণে অর্থনৈতিক এবং সেবাগতভাবে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিষয়টি স্থানীয় সমস্যা নয়, এটিকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, যথাযথ পরিকল্পনা ও সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া পর্যটকদের প্রত্যাশিত সেবা দেওয়া কঠিন হবে।

লেখক: আবেদ আহসান
পরিচালক
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি




Developed by e2soft Technology