
সিবিএল নিউজ: – আজ শহরের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো কক্সবাজারে ট্যুরিজম ডেস্টিনেশন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান (২০২৫-২০২৭) প্রস্তাবের ভ্যালিডেশন কর্মশালা। এই কর্মশালাটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর আইএসইসি প্রকল্পের আওতায় আয়োজন করেন এনরুট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারের গন্তব্য উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা, প্রস্তাবিত কৌশল, কার্যক্রম এবং নির্দেশনাগুলোর উপর অংশগ্রহণমূলক আলোচনা ও সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত গ্রহণ করা, যাতে পরিকল্পনাটি স্থানীয় প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়নযোগ্য এবং সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা যায়।
কর্মশালায় কক্সবাজারের গন্তব্য উন্নয়ন পরিকল্পনা (২০২৫-২০২৭) খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তাবিত কৌশল ও কার্যক্রম নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাদের মতামত প্রদান করেন। কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল গন্তব্য উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়ায় অংশগ্রহণকারীদের মতামত এবং পরামর্শ সংগ্রহ করা, যাতে প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সকল পক্ষের সম্মতি ও সমর্থন নিশ্চিত করা যায়। এছাড়া, কর্মশালার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল, কার্যক্রম এবং নির্দেশনাগুলি চূড়ান্ত করার জন্য সকল অংশগ্রহণকারী একত্রিত হন।

কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, জনাব জনাব সাইদুজ্জামান চৌধুরী, তিনি বলেন “আমাদের লক্ষ্য হলো স্থানীয় পর্যটন খাতের উন্নয়ন ঘটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে। পাশাপাশি, ট্যুরিজম সেল থেকে একটি বিশেষ শাখা গঠন করা হবে, যা পর্যটন সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম সমন্বিতভাবে পরিচালনা করবে। আমরা আশা করি, ডিসি অফিস আমাদের খসড়া পরিকল্পনার ওপর তাদের মূল্যবান পরামর্শ ও মতামত প্রদান করবে, যা আমাদের কার্যক্রমকে আরও কার্যকর এবং ফলপ্রসূ করে তুলবে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের এডিশনাল এসপি অলক বিশ্বাস বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় অনেক জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। আমাদের উচিত শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের মতো দেশগুলোর পর্যটন খাতকেও অনুসরণ করে আমাদের পর্যটোনকেভসমৃদ্ধ এবং নিরাপদভাবে গড়ে তোলা। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পুলিশ নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে, যাতে আমাদের পর্যটন খাত আরও নিরাপদ ও কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।”
সহকারী বন সংরক্ষক, টেকনাফ ও উখিয়া, মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, “কক্সবাজার, পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, আমাদের দেশের গর্ব এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য প্রতীক। মেরিন ড্রাইভের অপার সম্ভাবনা আমাদের সামনে এক স্বপ্নময় ভবিষ্যতের দৃশ্যপট উন্মোচন করে, যেখানে পাহাড়, সমুদ্র এবং আকাশের সংমিশ্রণ এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু, যদি প্রাকৃতিক সম্পদ ক্রমেই ধ্বংস হতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে পর্যটকরা কিভাবে কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করবে, সমুদ্রসৈকত ছাড়া তাদের জন্য কী থাকবে? এটি এমন এক প্রশ্ন, যা এখনই আমাদের সচেতনতার একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ট্যুর অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর আহবায়ক মিজানুর রহমান মিল্কি বলেন পর্যটনকে বিশ্বমানের উন্নিত ও বিদেশী ট্যুরিস্টদের আকর্ষন করতে পর্যটন বান্ধব স্থাপনা ও সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকে পর্যটন বান্ধব করে তুলতে স্কুলিং পর্যায় থেকে পর্যটন ধারনা প্রদান করা উচিত।
আইএলও এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ নাভিদ আকবর বলেন, “ধন্যবাদ জানাই সকল স্টেকহোল্ডারকে, যারা আজকের এই কর্মশালার সফল বাস্তবায়নে অবদান রেখেছেন। এটি দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রমের ফলস্বরূপ আজ আমাদের কাছে একটি বড় অর্জন। আইএলও শুরু থেকেই টুরিজম ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এ কাজ অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি আইএলও সর্বদা গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমাদের সার্বিক সহযোগিতা সবসময় অব্যাহত থাকবে, এবং আমরা একসাথে আরও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত।”
কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, এনজিও, স্থানীয় সরকার, টুয়াক প্রতিনিধি ও কমিউনিটি গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালার শেষে সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ জানানো হয় এবং আগামীতে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক পর্যটন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।