
রামুতে পিএফজি’র উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে ঘোষনা:
সম্মিলিত উদ্যোগে সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু: রামুতে ‘সংঘাত নয়, শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় রামু উপজেলা পরিষদের হিমছড়ি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম। পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের (পিএফজি) উপদেষ্টা ও সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন’ রামু উপজেলার সভাপতি মাষ্টার মোহাম্মদ আলম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান অতিথি মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, রামুতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য আছে। এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে হবে। ভালো গুলো চর্চা করতে হবে। আমরা যারা আছি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকবো। সত্যিকারে ধারণকৃত আমাদের যে পরিবেশ বিদ্যমান আছে, এটা শুধু বাহিরে বা সম্প্রচারে না হৃদয়ে ধারণ করে সম্প্রীতির চর্চা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ঘোষনাপত্র পাঠ করেন, পিএফজি’র সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা বেগম। সংলাপে সম্প্রীতির অভিযাত্রা বিষয়ক প্রবন্ধ পাঠ এবং প্রকল্প কার্যক্রম অবহিত করেন, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো. রাসেল আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন, পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপের সদস্য রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা ইয়াছমিন।
পিএফজি’র ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ মাইনুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বক্তৃতা করেন, রামু থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল খালেক, রামু সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মনির আহমদ, মেরংলোয়া রহমানিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ রফিক, রামু শ্রাবস্থী পাড়া সত্যপ্রিয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শীলারত্ন মহাথের, সম্প্রীতি পরিষদ রামু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. কে পি দাশ, রামু কেন্দ্রীয় কালী মন্দিরের পুরহিত সজল ব্রাহ্মণ চৌধুরী, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন রামু উপজেলার সভাপতি হাফেজ আহমদ, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি রামু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক খালেদ শহীদ, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি রামু উপজেলার সভাপতি আবদুল হাশেম, সাংবাদিক নুরুল ইসলাম সেলিম, সোয়েব সাঈদ, আহমদ ছৈয়দ ফরমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু উপজেলার সুপারভাইজার মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, সিআরবিএস নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াস, বাংলাদেশ মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ রামু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ বড়ুয়া বাঙ্গালী।
আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল এদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে একটি শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। বিশ্বের বুকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আমাদের প্রিয় স্বদেশকে গড়ে তুলতে চাই। গড়তে চাই একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ যেখানে প্রতিটি মানুষ থাকবে নিরাপদ, প্রত্যেকের ধর্ম, সংস্কৃতি বা বিশ্বাস অক্ষুন্ন রেখে মর্যাদার সাথে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন নিশ্চিত হবে। আন্তঃধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠান থেকে সকল অংশগ্রহণকারী ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ মুক্ত সামাজিক সম্প্রীতির রামু গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
‘সংঘাত নয়, ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ি’, ‘শান্তি-সম্প্রীতি নিশ্চিত করি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি’, ‘দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করি’ সহ বিভিন্ন শ্লোগান উপস্থাপনে অনুষ্ঠিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপে রামু উপজেলার ১১ ইউনিয়নের বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, বৌদ্ধ ভিক্ষু, হিন্দু ধর্মীয় পৌরোহিত, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, তরুণ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারী নেতৃবৃন্দ রামু উপজেলার আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার্থে ১১ দফার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, পবিত্র গীতা এবং ত্রিপিটক পাঠে অনুষ্ঠিত পিএফজি’র আন্তঃ ধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে অকালপ্রয়াত ইসলামিক ফাউন্ডেশন রামু উপজেলার কেয়ারটেকার মো. আবু বক্কর ছিদ্দিকের মৃত্যুে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।