
সিবিএল ডেস্ক: মজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, কারণ দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা বেড়ে যেতে পারে (হাইপারগ্লাইসেমিয়া)। তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করণীয়:
১. চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ:
রোজা রাখার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজন হলে ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি পরিবর্তন করা যেতে পারে।
২. সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা:
ইফতার: দ্রুত শর্করাযুক্ত খাবার (যেমন খেজুর) দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত মিষ্টি এড়িয়ে চলা ভালো। কম তেলে তৈরি হালকা খাবার, শাকসবজি ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
সেহরি: দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেয় এমন জটিল কার্বোহাইড্রেট (যেমন ব্রাউন রাইস, ডাল, ওটস) ও প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
পানি: পানিশূন্যতা রোধে ইফতার থেকে সেহরির মধ্যে প্রচুর পানি পান করা জরুরি।
৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা:
রোজার আগে, রোজার সময় এবং ইফতারের পর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত।
যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ৩.৯ mmol/L (৭০ mg/dL)-এর নিচে নেমে যায় বা ১৬.৭ mmol/L (৩০০ mg/dL)-এর ওপরে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলাই ভালো।
৪. অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়ানো:
রমজানে ভারী শারীরিক পরিশ্রম কমানো উচিত, বিশেষ করে দুপুরের দিকে, যাতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া না হয়।
৫. ওষুধ ও ইনসুলিন গ্রহণের নিয়ম পরিবর্তন:
সাধারণত সেহরি ও ইফতারের সঙ্গে ওষুধ বা ইনসুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ওপর, তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কে রোজা রাখা থেকে বিরত থাকবেন?
বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি ডায়াবেটিসের কারণে কোনো রোগীর অতিমাত্রায় ঝুঁকি থাকে (যেমন বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া হয়), তাহলে রোজা না রাখাই ভালো। ইসলাম ধর্মেও অসুস্থদের জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার:
রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা সঠিক পরিকল্পনা করে চললে নিরাপদে রোজা রাখতে পারেন। তবে নিজস্ব শারীরিক অবস্থা বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।