
নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু: রামুতে সরকারী জমি থেকে উচ্ছেদ আতংকে ভোগছে ৩ শতাধিক পরিবার। জীবনের একমাত্র সম্বল বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ না করার দাবীতে দুঃস্থ এসব পরিবার মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল দুপুরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কের রশিদনগর ইউনিয়নের বালির পাহাড় নামক এলাকায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বালির পাহাড় এলাকার স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ গ্রামের ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
মানববন্ধন চলাকালে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন- ১৯৯১ সালে প্রলংয়করী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে গৃহহারা অনেক পরিবার এখানে সরকারি খাস জমিতে বসবাস শুরু করে। বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙ্গনে বসতি হারানো অনেক পরিবারও এখানে বসতি গড়ে ঠাঁই নিয়েছে। এভাবে একেরপর এক গড়ে উঠে বসতি। বর্তমানে এ গ্রামে ৩০০ পরিবারের হাজারো মানুষের বসবাস। এখানে রয়েছে স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, এতিমখানা, কবরস্থান, দোকানপাটসহ নানান স্থাপনা। এখানে বসবাসকারি জনগোষ্ঠির অধিকাংশই হতদ্ররিদ্র। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায় মানবিক কারনে এখানে সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পুরো গ্রামে বিদ্যুতায়নসহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন হয়েছে। নানা সংকটেও এ গ্রামের মানুষের মিলেমিশে সম্প্রতিতে বসবাস করে আসছে। এমন সময়ে গ্রামটিকে উচ্ছেদ করে ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার করার ঘোষনায় একেবারেই হতভম্ব হয়ে পড়েছেন গ্রামবাসী। মাসখানেক আগে হঠাৎ ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসী কে কোন স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য বলা হচ্ছে। এমনকি যে কোন মূহুর্তে গ্রামবাসীকে উচ্ছেদের কথা বলছে প্রশাসন। উচ্ছেদ হলে এত বিশাল জনগোষ্ঠি কোথায় যাবে? গ্রামবাসী অবিলম্বে এ গ্রামে ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার করার প্রস্তাবনা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন- এ গ্রামের পাশেই অনেক বড় বড় সরকারি পতিত জমি রয়েছে, যেখানে ফুটবল ট্রেনিং সেন্টার করা যাবে। যদি সরকার গ্রামবাসীকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা চালালে গ্রামবাসী তাদের বসতি ও অধিকার রক্ষায় যে কোন আন্দোলন-সংগ্রামে নেমে পড়বে। প্রয়োজনে নিজেদের জীবন দিয়ে হলেও মাথাগোঁজার ঠাঁই রক্ষা করবে।
মানববন্ধন চলাকালে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বালির পাহাড় সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুবিনুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছুরুত আলম, সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ, মসজিদের ইমাম আবদুল্লাহ, আনন্দ বালা, রেজিয়া বেগম, মাদ্রাসা শিক্ষক সিহাব উদ্দিন, বালির পাহাড় শিশু নিকেতনের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমূখ।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।