
শাহ নিয়াজ: কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাছড়ি গ্রামের মেয়ে শাহেদা আক্তার রিপা। যিনি একাধিক যুব ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে আক্রমণাত্মক খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। সারা বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীরা তার অসাধারণ পারফরমেন্স দেখে মুগ্ধ। তিনি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে উল্লেখযোগ্য পারফরমেন্স দেখিয়েছেন সারা বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের। সেই সুবাদে ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদক-২০২৫।
জালাল আহমদ ও শামসুন্নাহার দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান শাহেদা আক্তার রিপা এবার প্রথম কোনো সরকার প্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী হতে যাচ্ছেন।
আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী সোমবার চারদিনের সফরে কাতার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সফরে প্রধান উপদেষ্টা সফরসঙ্গী হচ্ছেন শাহেদা আক্তার রিপাসহ বাংলাদেশের চার জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ। অন্যরা হলেন হলেন- ফুটবলার আফঈদা খন্দকার প্রান্তি, ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার ও শারমিন সুলতানা। বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে শাহেদা আক্তার রিপা তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক (Shaheda Akter Ripa) পেইজে স্ট্যাটাস দিয়ে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি লিখেন (হুবুহু), আমি আনন্দের সাথে জানাচ্ছি আসন্ন কাতার সফরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর জনাব মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের সফরসঙ্গী হিসেবে আমরা চার নারী ক্রীড়াবিদ আমি, আফিদা খন্দকার (টিমমেট), ক্রিকেটার সুমাইয়া আক্তার ও শারমিন সুলতানা।
এবারই প্রথম আমরা সরকার প্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী হচ্ছি ৪ জনের নারী ক্রীড়াবিদদের একটি দল। যা আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য এক অসাধারণ সম্মান এবং নারীর অগ্রযাত্রার এক নতুন দৃষ্টান্ত। সবাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য।
এদিক, এবারই প্রথম কোনো সরকার প্রধানের রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী হতে যাচ্ছেন নারী ক্রীড়বিদদের একটি দল। বাংলাদেশের এই নারী ক্রীড়াবিদদের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে কাতার ফাউন্ডেশন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান তার সফরসঙ্গী হতে যাওয়া ওই চার নারী ক্রীড়াবিদ। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে উচ্ছবাস প্রকাশ করেন তারা। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘আমরা এ সফরের আমন্ত্রণ পেয়ে ভীষণ আনন্দিত এবং আমাদের টিমমেটরাও আমাদের এ আমন্ত্রণে উচ্ছবসিত।’
নারী ফুটবলাররা জানান, ‘দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে এশিয়ার অন্য দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলার খুব একটা সুযোগ আমাদের হয় না। আমরা কাতার নারী টিমকে আমাদের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলার আমন্ত্রণ জানাতে চাই। এ সফরে আমরা তাদের স্পোর্টস ফ্যাসিলিটিসগুলো ঘুরে দেখতে চাই। তাদের প্রফেশনাল চিন্তাভাবনাগুলো জানতে চাই।’
নারী ক্রিকেটাররা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘কাতারে ক্রিকেট তেমনটা জনপ্রিয় নয়। আমরা এ সফরে ক্রিকেট নিয়ে তাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরির চেষ্টা করব। আমাদের পুরুষ ক্রিকেট দল ও নারী ক্রিকেট দলের গল্পগুলো তুলে ধরব। আমরা একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করে নিয়ে যাব।’
বৈঠকে নিজেদের জীবনসংগ্রামের কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান চার নারী ক্রীড়াবিদ। সরকার প্রধানের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফরের সুযোগ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তারা।
তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ও কাতার সফর নিয়ে পরিকল্পনা শুনে ব্যাপক উৎসাহ ও সমর্থন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্ম ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আমি চাই, তোমরা তোমাদের জীবনের সত্যিকারের কথাগুলো তাদের কাছে তুলে ধরবে। তোমরাই এদেশের স্পোর্টস অ্যাম্বাসেডর। সেখানে তোমরা এদেশের স্পোর্টসকে প্রতিনিধিত্ব করবে। তোমাদের এ রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে আমিও ভীষণ আনন্দিত।’
নারী ক্রীড়াবিদদের এ সফর সফল করতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।